টাঙ্গাইল শহরের সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে শিহাব মিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। রিপোর্টে গলা চেপে ধরে হত্যা করার আলামত পাওয়া গেছে।
রোববার(২৬ জুন) দুপুরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ফলাফল পাওয়া যায়। পরে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি থানায় পাঠানো হয়।
গত ২০ জুন সন্ধ্যায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব মিয়ার লাশ সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। নিহত শিহাব মিয়া সখীপুর উপজেলার বেরবাড়ী গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। পরদিন (২১ জুন) টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে শিহাবের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।
যদিও সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে শুরু থেকে আত্মহত্যা বলে আসছিল। কিন্তু পরিবার দাবি করছিল এটা পরিকল্পিত হত্যা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিহাবের লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আরএমওসহ তিন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
ওই তিন সদস্যদের মেডিকেল বোর্ড ময়নাতদন্তের কাজ সম্পন্ন করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোন কিছু (গামছা জাতীয়) পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ হত্যার আলামত পাওয়া যায়। তাছাড়া শরীরের অন্য কোন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত আসার পর পুলিশ সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুলের শিক্ষক নাসির উদ্দিন ও আবু বকর নামে দুইজনকে আটক করেছে।
নিহত শিহাবের ফুফাতো ভাই আল আমিন সিকদার জানান, চার মাস আগে সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে শিহাব মিয়াকে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দিন সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুল থেকে জানানো হয়েছিল শিহাব এক্সিডেণ্ট করেছে। আবার ফোন করে জানানো হয় শিহাব মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।
শিহাব যেখানে থাকতো সেখানে তাদের যেতে দেওয়া হয়নি। শিহাব আত্মহত্যা করার মতো ছেলে না। নিহতের বাবা ইলিয়াছ হোসেন জানান, কোন নিরপরাধ সন্তানকে যেন আর হত্যার শিকার না হতে হয়। তিনি সন্তান হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শিহাব হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ ব্যাপারে সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান ডক্টর মো. শরিফুল ইসলাম রিপনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুয়ায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধী যেই হোক, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।